দ্বীনের আলেম হওয়ার বাসনায় মালিবাগ জামিয়ায়, চৌধুরী পাড়া জামিয়ায় প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়ালেখা সম্পন্ন করেন। এরপর তাকমিল ফিল হাদিস সম্পন্ন করেন ঢাকার ফরিদাবাদ জামিয়া থেকে। সাথে সাথে তাখাসসুসও করেন তাফসীর, হাদিস ও ইফতাতে।
হাদিস ও তাফসিরের খেদমত দিয়ে কর্ম জীবন শুরু করেন। কিন্তু শ্রদ্ধাভাজন উস্তাদদের পক্ষ থেকে হাদিসের খেদমত এবং প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্বের লোভনীয় প্রস্তাব ও বাবা মা-এর কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তিনি মনোযোগ দেন হিফজুল কুরআনের দিকে। মেধা ব্যয় শুরু করেন হিফজ বিভাগের চার দেয়ালের আবদ্ধ পরিবেশের কচিকাঁচাদের নিয়ে।
দেখতে পান আবাসিক মাদরাসায় হিফজুল কুরআন বিভাগে শিশুদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি। সঠিক যত্নের অভাবে, অনাদরে তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে ভুগতে মানসিক রোগী হয়ে শিক্ষাজীবন অতিবাহন এবং গতানুগতিক প্রচলিত উদ্দেশ্যহীন শিক্ষা ব্যবস্থায় জীবনের বিশেষ একটা সময় খতিগ্রস্থ হয়। সেই সাথে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ঝকমকানিতে খতিগ্রস্থ সময়টাকে রিকভার করার অনিহা নিয়ে ভ্রান্ত আত্ম তৃপ্তিতে ডুবে থাকা।
তারাই সময়কে পথ দেখান যারা গতানুগতিকতা এড়িয়ে সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকেন। হিফজুল কুরআন গবেষক মুআল্লিম বিন মুবারাক-এর ক্ষেত্রে এ কথাটি আরও অনেক বেশি সত্য। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে হরফ ও লাহান মাশকের প্রচারণায় যখন সারা বিশ্বের নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তুমুল জয়জয়কার, তখন থেকেই তিনি মনোযোগ দিয়েছেন হিফজুল কুরআন গবেষণায়।
চড়াই উৎরাইয়ের জীবন পরিক্রমায় এক অপ্রীতিকর তিক্ততায় ভরা দীর্ঘ যুদ্ধ শেষে রচনা করেন বিরল ইতিহাস। শতাব্দীর ভিন্ন আবিষ্কার। নিয়ে এলেন ১৩ বছরের গবেষণায় ৫০০রও বেশি শিক্ষার্থীর উপর প্রায়োগিক হিফজুল কুরআনের এক আশ্চর্য আলাদিনের চেরাগ দারুল হিফজ। আলাদিনের চেরাগ ঘশা দিলেই যেমনিভাবে ইচ্ছা পূরণ হয়ে যায়, ঠিক তেমনি এই চেরাগ ঘষলেই পড়া মুখস্থ হয়ে যায় সাথে সাথে। যাতে অল্প সময়ে স্বল্প পরিশ্রমে খুব সহজে কুরআন মুখস্থ করা যায়, শিশু থেকে নিয়ে প্রবীণ যে কেউ।
বর্তমানে তিনি দারুল হিফজের প্রধান পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি দেশব্যাপী সর্বস্তরের মানুষের জন্য হিফজুল কুরআন কোর্স ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সের ব্যবস্থা করেছেন। দারুল হিফজের মাধ্যমে দরদী দক্ষ শিক্ষকদের সাথে নিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে দেশ পেরিয়ে সুদূর আরবের মাটিতেও ছড়িয়ে দিতে চান সেই আলো।